ভারতবর্ষের রেল পরিষেবা এক শিল্প হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে। সারাদেশব্যাপী রেল গাড়ি চালানো এক বিশাল কর্মযজ্ঞ, তার দ্বারা উপকৃত হচ্ছেন ভারতের কোটি কোটি মানুষ। সারা দেশজুড়ে যাত্রী পরিবহন, পণ্য পরিবহন এবং ডাক বিভাগের চিঠি পরিবহনের ক্ষেত্রে ভারতীয় রেল এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। তবুও ভৌগোলিক সমস্যার কারণে ত্রিপুরা ও কাশ্মীরের রেল পরিষেবা দীর্ঘদিন হয়ে গেছে শুরু করা যায়নি। তবে সেই সব প্রাকৃতিক বাধা-বিপত্তিকে কাটিয়ে উঠে ২০০৮- এর ৫ ই অক্টোবর এবং ১১ ই অক্টোবর যথাক্রমে ত্রিপুরা ও কাশ্মীরের রেল চলাচল শুরু হয়। তাই একে ঐতিহাসিক রেল যাত্রা বলা যেতেই পারে।
প্রথম রেল যাত্রা: বহু বছর পর স্বাধীন ভারতের রেল মানচিত্র সংযুক্ত হলো ত্রিপুরা ও কাশ্মীর উপত্যকা। গত ৫ ই অক্টোবর ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য ত্রিপুরা শুরু হল প্রথম রেল যাত্রা। এই রেলযাত্রার উদ্বোধন করেন আগরতলা স্টেশন ম্যানেজার রমেশ চন্দ্র রায়। উদ্বোধনী যাত্রা ৪৫ মিনিট পর দ্বিতীয় ট্রেন ছাড়ে শিলচরের উদ্দেশ্যে। এই প্রসঙ্গে লামডিং ডিভিশন এর জেনারেল ম্যানেজার জানান প্রতিদিন চারটি প্যাসেঞ্জার ট্রেন যাতায়াত করবে।
আগরতলার পর ১১ ই অক্টোবর কাশ্মীর উপত্যকায় রেলযোগাযোগ সূচিত হল কড়া নিরাপত্তার অঘোষিত কারফিউ এর মধ্যে। দক্ষিণ কাশ্মীরের অনন্তনাগ আর মধ্য কাশ্মীরের মধ্যে রেল যোগাযোগ শুরু হয়। এই রেল যাত্রা সূচনা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ডঃ মনমোহন সিং এবং তার সাথে ছিলেন ইউ. পি. এ চেয়ারপারসন সোনিয়া গান্ধী। রেলমন্ত্রী লালু প্রসাদ যাদব এবং কেন্দ্রীয় জল সম্পদ মন্ত্রী সইফুদ্দিন সোজ। ১২ই অক্টোবর থেকে জেলার রাজওয়ানশের থেকে শ্রীনগর হয়েছে দক্ষিন কাশ্মীরের অনন্তনাগ পর্যন্ত চলবে।
উপযোগিতা: উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্য ত্রিপুরায় রেল পরিষেবা চালু হয় কোন শহর থেকে রেলপথে আগরতলার জন্য অনেক সময় লাগতো ঘুরে আসবার কারণে। এবার প্রতিবেশী রাজ্য আসামের সাথে সরাসরি রেলযোগাযোগ হওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে অন্য রাজ্যের সাথে রেল যোগাযোগ এর সম্ভাবনা বাড়লো। কাশ্মীরের স্থাপিত রেল পরিষেবা ও যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সাহায্য করবে।
উপসংহার: ত্রিপুরা ও কাশ্মীরের ঘটনা কিন্তু সত্যি ঐতিহাসিক কারণ ভৌগলিক সমস্যা থাকায় এই কাজ ছিল বড় কঠিন। স্বাধীনতার ৬১ বছর পর আগরতলা ও কাশ্মীর ভারতের মানচিত্রে স্থান পেল। অবশ্য এটা সংশ্লিষ্ট রাজ্য ভারতবাসীর কাছে আনন্দের ও গৌরবের বিষয়।