শিশু দিবস নিয়ে কিছু কথা

শিশুর স্বাস্থ্যই দেশের স্বাস্থ্য
এক জনপ্রিয় কবি এক নবজাতকের উদ্দেশ্য তাঁর অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেছিলেন
‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ
প্রানপনে পৃথিবীর সরব জঞ্জাল
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি –

কবি শুধু সমাজকে ভবিষ্যতের জন্য দিশা জানাতে পারেন। আর পারেন আশীর্বাদ করতে। সমাজে ব্যক্তিদের আর প্রশাসনকে ঐ কবি নির্দেশিত দিশার রূপকার হতে হয়।এর মধ্যেই বৃহত্তর সমাজের মঙ্গল লুকিয়ে আছে। কবির কাছে ঐটুকুই তৃপ্তি। প্রাপ্তি ঘটবে নবজাতকের স্বচ্ছ-সুন্দর-সুনির্মল জীবন।

পৃথিবী জুড়ে রয়েছে নানা সমস্যা। স্বাস্থ্যহীনতা – পুষ্টিহীনতা, অশিক্ষা -কুশিক্ষা, দারিদ্র্য, প্রতিবন্ধীদের দীর্ঘশ্বাস, বাসস্থানের অভাব, পণপ্রথা – বধুহত্যা, সমাজে বয়স্কদের প্রতি অবহেলা, নারী নির্যাতন – এই ধরনের বিভিন্ন সমস্যা আজ আমাদের ভাবতে হয়। তাই এরা এক একটি বছর বিশেষ করে চিন্হিত করে এক একটি সমস্যার সমাধানের জন্য নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেন।

আধুনিক পৃথিবীতে আজ এটাই রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।সারা বিশ্বে আজ শিশুদের বিভিন্ন সমস্যা চোখে পড়ছে। রাষ্ট্রকল্যানের অনুকূল এদের নিয়ে চিন্তার সুত্রে বিগত ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে আন্তর্জাতিক শিশুবর্ষ পালন করা হয়েছে। এবং সেই থেকে ভারতবর্ষে শিশুপ্রেমি জওহরলাল নেহেরুর জন্মদিনটিকে অর্থাৎ ১৪ নভেম্বর শিশু দিবস না ‘বাল্য দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। বছরের ঐ দিনটিকে নানা ধরনের অনুষ্ঠান পালন করা হয়।

এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শিশুরাই জাতির ভভিষ্যত। সমাজের সকল শ্রেনীর শিশুদের অশিক্ষার অভিশাপ থেকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু ভারতবর্ষের শিশুদের মধ্যে অশিক্ষা ও অপুষ্টির সঙ্গে মিশে আছে তাদের পরিবারের সীমাহীন দারিদ্র্য, দারিদ্র্য লাঞ্চিত জনগনের অশিক্ষা কুসংস্কারতাদের সন্তানের ভবিষ্যত কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ।

সমস্যা সমাধানের নানান সরকারী বেসরকারী উদ্যোগ: ভারতবর্ষে শিশু শ্রমিকদের মধ্যে শতকরা ষাট ভাগই দশ বছরের নীচে বয়স। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার ‘শিশু শ্রমিক নিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ আইন। অনুসারে শিশু শ্রমিক হিসেবে গন্য করে ১৪ বছর পর্যন্ত বালক-বালিকাদের ।

এই হিসেবে এদেশে সরকারী পরিসংখ্যান শিশু শ্রমিকদের সংখ্যা ৪ কোটি ৪৪ লক্ষ। এদের মধ্যে ৬০% শিশু কাজ করে নানা ধরনের কল-কারখানায়, বাকি কাজে গৃহস্থালীর কাজে অথবা চা ও খাবারের দোকানে। কল-কারখানায় বিপজ্জনক কাজে নিযুক্ত শিশু শ্রমিকদের কাজ থেকে সরিয়ে বিদ্যালয় পরিবেশ নিয়ে আসার জন্য সম্প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার ৮৫০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প রচনা করেছেন। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ সমাধান করার কথা বলা হয়েছে।

শিশু কল্যানে শিক্ষার ভূমিকা : শিশুদের নিরক্ষতার থেকে মুক্ত করার একটি কার্যকরী চিন্তা ধারা সমাজকে উপহার দিয়ে ছিলেন ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। তাঁর অভিমত ছিল ‘একজন শিক্ষিত মায়ের সন্তান কখনো নিরক্ষর থাকতে পারে না। এ কথা আজ জাতীয় সরকারের কর্মসূচিতে আছে। তাঁরা বুঝতে পেরেছেন এই ভাবে দুঃস্থ শিশু শ্রমিককে শিক্কার আলোয় আলোকিত করা যেতে পারে।

sisu dibos rachana in bengali

Leave a Comment