পাতাল রেল রচনা

মাটির নীচ দিয়ে যে রেল চলে তাকেই বলে পাতাল রেল বা ভূগর্ভ রেল। এরই আর এক নাম – ‘মেট্রো রেল’। কলকাতার হাজার আকর্ষণের মধ্যে অন্যতম প্রধান হল এই পাতাল রেল, মেট্রোরেল পৃথিবীতে প্রথম চালু হয় ফ্রান্সের প্যারিস শহরে, মেট্রোরেল নামটা এদের দেওয়া জনবহুল শহরে যানজট সমস্যার সমাধানে পাতাল রেলের গুরুত্ব অপরিসীম।

মেট্রোরেল: আমাদের দেশের কলকাতা শহর ও অত্যন্ত জনবহুল। তাই কলকাতা শহরই আমাদের দেশে প্রথম মেট্রোরেল চালাবার গৌরবের অধিকারী।

প্রধানত কলকাতাবাসী সুবিধার জন্য এই পরিকল্পনা করা হয়। অতিরিক্ত লোক সংখ্যার দরুন কলকাতা বাস ট্রাম উপচে পরা ভিড়, যানবাহনের মন্থরগতি ও যানজটের ফলে ভোগান্তি- এসবরে হাত থেকে সাধারণ মানুষকে মুক্তি দিতে মেট্রোরেল পরিকল্পিত হয়েছিল।

কলকাতার মেট্রোরেল ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন তত্কালীন প্রধান মন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী ১৯৭২ সালের ২৯শে ডিসেম্বর। ১৯৭৩ সালে আনুষ্ঠানিক প্রকল্পের কাজ কর্মের সূচনা হলেও প্রকৃতপক্ষে ১৯৭৮ সাল থেকেই পাতাল রেলের কাজ যথাযথভাবে শুরু হয়।

কলকাতার পাতাল রেল চালু হয় ১৯৮৪ সালের ২৪শে অক্টোবর। অবশ্য তা টালিগঞ্জ পর্যন্ত পাতাল রেল চালু হয় ১৯৯৫ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর।

দমদম থেকে টালিগঞ্জ পর্যন্ত মেট্রোরেলের স্টেশন সংখ্যা সতেরটি। এই সম্পুর্ন পথের দৈর্ঘ্য ১৬.৮৫ কিলোমিটার। পাতাল রেল প্রতিদিন কয়েক হাজার যাত্রী যাতায়াত করে। প্রতি স্টেশনে গাড়ি থামা মাত্র ৩০ সেকেন্ড। প্রতি গাড়িতে কামরার সংখ্যা ৮টি। প্রতি কামরায় ৫৪ জনের বসারও ২১৮ জনের দাঁড়ানোর ব্যবস্থা আছে।

এই রেলের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার। এই গাড়ি চলতে শুরু হওয়ার ঠিক আগে এর দরজা আপনা থেকেই বন্ধ হয়ে যায় এবং পরের স্টেশন গাড়ি থামলে দরজা আপনা থেকে খুলে যায়। সামনে কোন স্টেশন আসছে তা গাড়ির মধ্যে ঘোষনা করা হয়। প্রত্যেকটি স্টেশনকে সুন্দরভাবে সাজানো হয়েছে। এখন দমদম থেকে টালিগঞ্জ পৌঁছতে পাতাল রেল সময় লাগে ৩৩ মিনিট।

উপকারিতা : পাতাল রেল মাটির নিচ দিয়েচলে বলে কোনো যানজটের সৃষ্টি হয় না। অন্য যানবাহনের চেয়ে এতে অনেক দ্রুত গন্তব্যস্থল পৌছান যায়। এতে ভ্রমন আরামদায়ক ও নিরাপদ। এতে শব্দদূষণ কিংবা বায়ুদূষণ হয় না। সুরঙগ পথের উপরের জায়গায় কাজে লাগানো যায়।

মাটির উপরে কলকাতায় রাস্তাঘাট ও যানবাহনের অবস্থা যতই শোচনীয় হোক না কেন পাতাল রেলের পরিবেশ খুবই পরিষ্কার পরিছন্ন। প্রতীটি স্টেশনে পর্যাপ্ত আলো ব্যবস্থা, ভিডিও প্রদর্শনী ও চলমান সিড়ির ব্যবস্থা, ভিড় হুরোহুরি ছাড়া টিকিট কাতার ব্যবস্থা, হকারমুক্ত প্লাটফর্ম ও ট্রেনের কামরা, ট্রেনের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা পাতাল রেলকে আকর্ষনীয় করে তুলেছে। পাতাল রেল আমাদের দেশের গর্ব।

বিদ্যাসাগর সেতু রচনা

  • ভারতের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় কোন শহরে?

    উত্তর: ভারতের প্রথম মেট্রোরেল চালু হয় কলকাতা শহরে।

  • ভারতের দীর্ঘতম মেট্রো রেল পথ কোন শহরে রয়েছে?

    উত্তর: ভারতের দীর্ঘতম মেট্রোরেল পথ দিল্লি শহরে রয়েছে।