দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান বাংলা রচনা

‘বিজ্ঞান’  শব্দটির অর্থ হল বিশেষ প্রকার জ্ঞান। বিজ্ঞানের সাহায্য ছাড়া আধুনিক জীবনযাত্রা অবাস্তব ও অকল্পনীয়। আজ বিংশ শতাব্দীতে এসে বিজ্ঞানের চরম উন্নতি ঘটেছে। মানুষের দৈনন্দিন জীবনে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের অলিগলিতে আজ বিজ্ঞান প্রবেশ করেছে। বর্তমানে বলা যায় বিজ্ঞানই আমাদের বন্ধু।

 বিজ্ঞান কি দিয়েছে?

বিজ্ঞানের সৃষ্টি করা প্রতিটি মানুষের হাতের মুঠোয়। যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত। ট্রেন, বাস, জাহাজ, বিমান সমস্ত কিছুই বিজ্ঞানের দান। এছাড়াও বিজ্ঞানের দান হিসেবে টেলিফোন, টিভি, আশ্চর্য আবিষ্কার আমরা বিজ্ঞানী থেকেই পেয়েছি।

 দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান

দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ঘুম ভাঙার পর থেকে শুরু করে শোবার ঘর পর্যন্ত যে সমস্ত জিনিস আমরা হাতের কাছে পায় তা হল বিজ্ঞানের অবদান। যেমন টুটপেস থেকে শুরু করে সংবাদপত্র, লাইট, ফ্যান সমস্ত কিছু বিজ্ঞানের পরিসেবা।

বৈদ্যুতিক যুগের বদলে এখন আমরা পেয়েছি ইলেকট্রনিক্স এর যুগ। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের প্রভাব। প্রতিদিন বিনোদনের জন্য আমরা যে টিভি, ভিডিও, ঘড়ি ব্যবহার করি তাও বিজ্ঞানের অবদান। এক কথায় বিজ্ঞান হল আমাদের সেই সব আলাদিনের প্রদীপ যা চোখ বুঝলে আমাদের সামনে সমস্ত কিছু হাজির করতে পারে।

 বিজ্ঞান এর প্রভাবে গ্রামীণ পরিবর্তন

শুধুমাত্র শহরেই নয়, গ্রামেও বর্তমানে বিজ্ঞানের দান অনস্বিকার্য। গ্রামের মানুষ আগে ছিল প্রকৃতিনির্ভর অনাবৃষ্টি ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। কিন্তু বিজ্ঞান প্রদত্ত নদীর বাঁধ দেওয়া গ্রামের মানুষ আজ এ ধরনের বিপর্যয় আর ভয় পাইনা। বিজ্ঞানের দান এর সাহায্য গ্রামের মধ্যে আজ বিদ্যুৎ গিয়ে পৌঁছেছে।

যার ফলে গ্রামীণ কুটির শিল্পের উন্নতি ঘটেছে। একজন তাতে যে পরিশ্রম করে দাঁড়িয়ে তার তাকে আর তা করতে হয় না। বৈদ্যুতিক যন্ত্রের সাহায্য তারা দ্রুত তৈরি করতে সক্ষম। এভাবে বিজ্ঞান গ্রামীণ অনুন্নত জীবনে উন্নতির আলো জ্বেলেছে।

 জীবনীশক্তি বিজ্ঞান

শুধুমাত্র বিনোদন, ব্যবহার্য সামগ্রী ছাড়াও মানুষের স্বাস্থ্য রক্ষার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের অবদান প্রচুর। বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থের আবিষ্কার, শল্য চিকিৎসা রোগ নির্ণয়ের যন্ত্র নির্মাণ করেছে এই বিজ্ঞান।

এ ছাড়াও বহু মানুষের জীবন আজ বেঁচে রয়েছে বিজ্ঞানের আবিষ্কার করা ওষুধের মাধ্যমে। মানব শরীরে কোন হাড় ভেঙে গেলে জোড়া দেওয়া কঠিন অস্ত্রোপচার আজ কোন ব্যাপার নয়। এক্ষেত্রে বিজ্ঞানই সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে।

বর্তমান যুগ পুরোপুরি বিজ্ঞানভিত্তিক প্রযুক্তির যুগ যা আজ মানুষ জীবন প্রতিটি মুহূর্তে সঙ্গ দিচ্ছে। কিন্তু এই বিজ্ঞানের কিছু অশুভ দিক রয়েছে। কিন্তু স্বার্থান্বেষী মানুষ বিজ্ঞানের অভিশাপ এ পরিণত করতে চাইছে। কিন্তু তাদের এই কুৎসিত মতলব যাতে কার্যকরী না হয় তার দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

বিজ্ঞান কে কাজে লাগিয়ে যে মানুষের কুমতলব তার প্রমাণ পাওয়া গেছে হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা নিক্ষেপের ঘটনায় মাধ্যমে। মানব কল্যাণে বিজ্ঞান কে কাজে লাগাতে হবে তবেই তা মানুষের কাছে আশীর্বাদ স্বরূপ হবে। আর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে পৌঁছে দিতে হবে বিজ্ঞানের দান কে। তবে বিজ্ঞানের অবদান পুরোপুরি ব্যবহার করা সম্ভবপর হবে।

আরও পড়ুন – বিজ্ঞান সাধনায় বাঙালি প্রবন্ধ রচনা

আরও পড়ুন – বিজ্ঞান আশীর্বাদ না অভিশাপ সম্পর্কে বাংলা রচনা

আরও পড়ুন – বিজ্ঞান ও কুসংস্কার সম্পর্কে বাংলা রচনা