প্রতিবন্ধী সমস্যা বর্তমানে সারা বিশ্বের একটি বড় সমস্যা। রাষ্ট্রসঙ্ঘের হিসাব অনুযায়ী সারাবিশ্বে 50 কোটির বেশি নানা ধরনের প্রতিবন্ধী আছে। সমাজের বাসিন্দা হয়ে এদের সমাজের করুণার পাত্র।প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণেই এরা সমাজের সকল সুবিধা গ্রহণ করতে পারেন। অন্য দয়া-দাক্ষিণ্য উপর নির্ভর করে এদের বাঁচতে হয়। এই পরনির্ভরতা হল তাদের প্রধান সমস্যা।
ভারতে প্রতিবন্ধী সমস্যা
ভারতে প্রতিবন্ধী অত্যন্ত তীব্র। বিশ্বের উন্নত দেশসমূহে প্রতিবন্ধী সমস্যার সমাধান করা হলো ভারতে এই সমস্যা সমাধানে বিশেষ কোনো চেষ্টা হয়নি। ভারতে প্রতিবন্ধী আছে লক্ষ লক্ষ। তাদের সমস্যার শেষ নেই।
তাদের সমস্যা সমাধানের জন্য কোন উন্নত পরিকল্পনা বা কর্মসূচি গৃহীত হলে তার সুযোগ্য সকলে পায় না। এখনও এখনও এমনই অবস্থা যে শিক্ষিত অন্ধকে স্কুলের শুধুমাত্র অন্ধত্বের কারণ এই কাজে যোগ দিতে দেওয়া হয় না।
ভারতে প্রতিবন্ধী সমস্যা কারণ
যারা অসম্পূর্ণ অঙ্গ নিয়ে পৃথিবীর মাটি স্পর্শ করল। তার জন্য দায়ী তাদের পিতা-মাতার কোন রোগ নির্ণয় তোমার অপুষ্টি নয়তো পরিবেশ দূষণ জনিত প্রতিক্রিয়া। কেউ যদি নিয়ে জন্মায় কেউবা জীবন-যন্ত্রণা চাপে মানসিক ভারসাম্য হারায়। যান্ত্রিক সভ্যতার বলি রূপে নানা দুর্ঘটনায় আজকের মানুষ হারাচ্ছে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ।
রোগে কিংবা অপুষ্টিতে হারাচ্ছে সুন্দর জগৎকে দেখার ক্ষমতা। শব্দ দূষণ দ্বারা শ্রবণশক্তি হারাচ্ছে।কুষ্ট, পোলিও, প্রভৃতি রোগ অনেকেরই জীবনের আনন্দকে ছিনিয়ে নিচ্ছে।
প্রেম ও সেবার মনোভাব
মানুষকে শ্রদ্ধা ও ঈশ্বররূপে সেবা করার উপদেশে ধর্মশাস্ত্রের পৃষ্ঠাতেই নিবদ্ধ।তাই ভালবাসা দিয়ে প্রতিবন্ধীদের মুর ম্লান, মূক মুখে ভাষা ফোটানের শ্রান্ত-শীর্ণ-ভগ্ন বুকে আশা জাগানোর উদ্যম সুস্থ মানুষকেই নিতে হবে।
সফলতা
প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সুপ্ত রয়েছে আশ্চর্য প্রাণশক্তি ও কর্মপ্রতিভা।সুযোগ পেলে যে এদের সুপ্তশক্তি জাগ্রত হয়ে উঠতে পারে।এরাও জীবনে সফল হতে পারে তার প্রমান বিশ্ব বিজয়িনী হেলেন কেলার।আর পশ্চিমবঙ্গ মুক মুখে ভাষা ফোটা সরকারী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিল্পী ঝুমা রায় এবং সাঁতার পদক বিজয়ী মাসদূর রহমান।
ছাত্রদের দায়িত্ব ও কর্তব্য
প্রতিবন্ধীদের প্রতি সমাজের যেমন দায়িত্ব আছে তেমনি ছাত্রদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আছে। ছাত্র সমাজকে প্রতিবন্ধী সমস্যা সম্পর্কে সচেতন হয়ে তাদের সাহায্যের জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের জন্য হৃদয়ের মধ্যে রাখতে হবে আন্তরিক সহানুভূতি। তাদের সাহায্যের জন্য সর্বদা হাত বাড়াতে হবে। অন্ধ ব্যক্তিকে রাস্তায় পথ চলা সাহায্য করতে হবে।
প্রতিবন্ধীদের মনে আত্মবিশ্বাস ফিরে আসার জন্য তাদের চেষ্টা করতে হবে। প্রতিবন্ধীকে হতাশার অন্ধকার থেকে টেনে তুলে নতুন জীবনের পথে অন্যতম কর্তব্য। যারা বিকলাঙ্গ, দরিদ্রের জন্য দুমুঠো খেতে পায়না, ছাত্র সমাজ তাদের জন্য অর্থ সংগ্রহ করতে পারে। এ তাদের পবিত্র কর্তব্য
উপসংহার: কিন্তু প্রতিবন্ধীদের সংখ্যার তুলনায় কল্যাণ প্রয়াস যথেষ্ট নয়। প্রতিভাবান ও উচ্চশিক্ষা প্রাপ্ত হল সাময়িকভাবে প্রতিবন্ধীদের কর্মে নিযুক্ত দুরাশা মাত্র।
সুতরাং হাতের কাজের চারু ও কারুশিল্প ইত্যাদি দক্ষতা অর্জনের দিকে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। প্রতিবন্ধীদের স্বাধীনভাবে জীবিকা অর্জনের ব্যবস্থা করতে পারলে তারা আত্মনির্ভরশীল হওয়া সুস্থ ভাবে জীবন যাপন করতে পারবে।
আরও পড়ুন – শিক্ষা বিস্তারে গ্রন্থাগারের ভূমিকা
আরও পড়ুন – ভারতের বাজারে বিদেশী বিনিয়োগ