দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও তার প্রতিকার

নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধি সাম্প্রতিক জনজীবনের বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য। অভাব-অনটনে জেরবার মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত জীবন যখন নানা সমস্যায় জর্জরিত তখন মূল্যবৃদ্ধি তীব্র সংকট সৃষ্টি করে। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে যদি সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় তাহলে কোন সমস্যা সৃষ্টি হয় না।


 দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পূর্ব ইতিহাস


ব্রিটিশের শোষণ এবং চটজলদি অর্থনৈতিক সংকট নিরসনের জন্য ব্রিটিশ সরকার যেসব ভ্রান্ত অর্থনীতির গ্রহণ করে তার প্রভাব স্বাধীন ভারত বর্ষ অক্ষুন্ন রইল। কোন কোন ক্ষেত্রে সেই প্রভাব আরো শোচনীয় হয়ে উঠল।

বিশেষ করে মুদ্রাস্ফীতি ও টাকার মূল্য হ্রাসের মত পশ্চাত্পদ অর্থনৈতিক লক্ষনগুলো স্পষ্ট করেই দেখা দিল ১৯৬২ খ্রিস্টাব্দে থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত মূল্য সূচক বৃদ্ধির যে পরিসংখ্যান পাওয়া যায় তাতে দেখা যায় মূল্যসূচক প্রায় কখনো স্থিতিশীল হয়নি হয়েছে তবে সাম্প্রতিককালের সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করে গিয়েছে।


দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণ


দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির মূল কারণ হলো স্বাধীনতার ভারতে ধন বণ্টনের বৈষম্য দূর করা যায় না। অসংখ্য সমস্যার ফলে দেশের দুর্বল অর্থনীতি হয়েছে দুর্বলতর। মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধি উৎপাদন ব্যবস্থার স্থিতিশীল তাকে বারবার আঘাত হেনেছে।

অথচ অর্থনৈতিক পরিকল্পনা রয়েছে মুষ্টিমেয় কিছু লোকের হাতে এসেছে প্রচুর অর্থ অপরদিকে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা হারিয়েছে। ধনী আরো ধনী হয়ে উঠছে এবং গরীব আরো গরীব হয়ে পড়েছে।

স্বাধীনোত্তর ভারতবর্ষ ধন বৈষম্য দূর করা যায়নি। পর্যাপ্ত পরিমাণে শিল্পায়ন হয়নি এবং কৃষির উন্নতির যথেষ্ট পরিমাণে হয়নি।

কর্মসংস্থান পর্যাপ্ত নয় বেকারের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এছাড়া মুনাফালোভী কালোবাজারিদের অর্থলিপ্সা অর্থের জন্য তারা তাদের সমস্ত মনোযোগ দিয়ে কেবল নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির প্রতি অধিক উদ্যোগে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য মজুদ করে তারা বাজারে এসব পণ্যের কৃত্রিম সৃষ্টি করেছে এবং পণ্যের দাম বাড়িয়ে অধিক মুনাফা লুটছে এবং মানুষকে দুর্বৃত্তদের অন্ধকারে নিক্ষেপ করছে।


প্রতিকার ব্যবস্থা


দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সরকার থেকে কালো টাকা উদ্ধার অভিযান চালানো দরকার। অসাধু ব্যবসায়ীদের ব্যবসা বন্ধ করার জন্য কঠোর আইন প্রণয়ন এর প্রয়োজন আছে।

এছাড়াও দেশের অর্থনৈতিক পরিকল্পনা তৈরির প্রয়োজনীয় দ্রব্য বিক্রয়ের জন্য সরকারের ভার লাঘব করার কিছু জিনিসপত্র প্রয়োজনীয় ভর্তুকি দেওয়া সরকারি কাজে অতিরিক্ত ব্যয় করা চোরাচালান বন্ধ করে উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখা এবং সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে তার প্রতি প্রতিরোধ গড়ে তোলার প্রয়োজন আছে।

 উপসংহার:  দেশ কেবলমাত্র মানুষের সুঃখ ও স্বাচ্ছন্দ্য ভোগের জন্য নয়। দেশের সামগ্রিক জনসাধারণ দেশের উপর সমান অধিকার আছে। তাই সরকারের উন্নত সমাজ থেকে অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করা যতটা সম্ভব জাতীয় সম্পাদক জাতীয় আয়ের সকলের মধ্যে সমবন্টন করে দেওয়া।