একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা

একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা: পৃথিবীতে যখন প্রথম প্রাণের সঞ্চার হয় তখন থেকেই গাছের সঙ্গে মানুষের নিবিড় সম্পর্ক। গাছের সঙ্গে রয়েছে এক অদৃশ্য বন্ধুত্ব। আদিম যুগের মানুষ গাছের ফলমূল খেয়ে জীবন ধারণ করত। আর পোশাক হিসেবে তারা ব্যবহার করত গাছের ছাল। এভাবে গাছ আমাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব রক্ষা করেছে। তথাপি আমরা কিন্তু অন্যকে আঘাত করে চলেছি।

একটি গাছ একটি প্রাণ রচনা

মানুষ ও অরণ্য

অরণ্য ও মানুষ একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। আদিমকাল থেকে তাদের প্রয়োজন মিটিয়ে আসছে। গাছ মানুষকে বেঁচে থাকার অক্সিজেন’, অসুস্থ হলে ওষুধ, আসবাবপত্র ও জ্বালানি কাঠ দেয় অর্থাৎ জীবনধারণের প্রধান হিতৈষী এক বৃক্ষরাজি।

গাছের অপব্যবহারের কুফল

সভ্যতার পথে প্রধান অন্তরায় হল বিশাল অরণ্য। কেননা বর্তমান বৃদ্ধিপ্রাপ্ত জনসংখ্যায় বাসস্থানের জন্য প্রয়োজন ফাঁকা জায়গা। কিন্তু অরণ্য থাকলে বিস্তর ফাঁকা জায়গা পাওয়া সম্ভব নয়। তাই বৃক্ষছেদন করা হচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে পরিবেশ দূষণ। বনভূমি ধ্বংসের ফলে পরিবেশের ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে। আর দেখা দিচ্ছে নানারকম প্রাকৃতিক বিপর্যয়, বন্যা, খরা, ভূমিকম্প ইত্যাদি।

বন সংরক্ষণ

শস্য-শ্যামলা পৃথিবী ধীরে ধীরে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। এজন্য বন সংরক্ষণের দিকে নজর দিয়েছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা। অরণ্যের সঙ্গে নিবিড় যোগ রয়েছে পরিবেশের। পরিবেশের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রিত হয় অরণ্যর মাধ্যমে। আবার অরণ্যে জন্য ঘটে বৃষ্টিপাত।  আর পরিবেশ দূষণ রোধ করার জন্য প্রয়োজন বনসংরক্ষণ। ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য বন সংরক্ষণ করতে হবে। এককথায় দেশকে মরুভূমি হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে বন সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন।

 বনমহোৎসব

১৯৫০  খ্রিস্টাব্দ থেকে শুরু হয়েছে ভারতে বনমহোৎসব। এর মূল ধ্বনিটি হল – ‘ গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান’। অর্থাৎ বনসংরক্ষণ করা হলো উদ্দেশ্য। অরণ্যদ্বারাই সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।তাই এই মহোৎসব এর মাধ্যমে মানুষকে বৃক্ষ রোপণের জন্য উৎসাহিত করতে হবে। বনমহোৎসব বৃক্ষরোপণ উৎসব কার্যকরী হলে দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক দিকে উন্নতি ঘটবে। আর এসব দিকে নজর রেখে সরকার এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

 গাছের গুরুত্ব

বৃক্ষরোপণ উৎসব শুধুমাত্র উৎসব হয়ে থাকলেই চলবে না। বনসৃজন এর জন্য প্রয়োজন গুরুত্বকে ভালোভাবে পালন করা। আর বর্তমানে মানুষের গুরুত্বকে বুঝতে সচেষ্ট হয়েছে। তারা বুঝতে পেরেছে ভূমিক্ষয় থেকে শুরু করে বন্যানিয়ন্ত্রণ সংরক্ষণের দ্বারা সম্ভব। আর এই কারনেই জনগণের প্রতি আগ্রহ হয়েছে এবং দেশকে বাঁচানোর সংকল্প গ্রহণ করেছে।

 আমাদের প্রাণ কে বাঁচানোর জন্য প্রতি মুহূর্তে প্রয়োজন বনভূমির। আর আমাদের দেশ ভারত বর্ষ যার পরিমাণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই আজ প্রয়োজন বনসৃজন এর জন্য নিজেদের নিয়োগ করা। সুস্থ স্বাভাবিক ভাবে গড়ে তুলে নিজেদের জীবনকে সুখময় করে তোলা।

আমাদের জীবনের সুস্থভাবে এনে দিতে পারে। আর তাই বর্তমানে এটিকেই মন্ত্র উচ্চারণ করতে হবে। একটি গাছ একটি প্রাণ। আর তাহলে  আমরা দেশের সম্পদকে ধীরে ধীরে বাড়িয়ে তুলতে পারব। আর এর সঙ্গে সঙ্গে পরিবেশকে সুস্থ ও স্বাভাবিক ভাবে গড়ে তুলতে পারব।

জলাভূমি সংরক্ষণ বাংলা রচনা