অমর্ত্য সেন বাংলা রচনা

পৃথিবীর বিশাল জনসংখ্যার এক ক্ষুদ্র তম অংশ বাঙালি তবু শেষ শতাব্দীতে দু-দুবার এই বাঙালি আসন পেয়েছে স্টকহোমে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর দ্বিতীয়বার নোবেল আনলেন অমর্ত্য সেন। ৮৫ বছরের ব্যবধানে এই পুরস্কার শুধু বাঙালি নয় সমগ্র ভারতবাসীকে আনন্দিত করেছে। ভারত আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ প্রমাণ করেছে।

 অমর্ত্য সেনের জন্ম ও বংশ পরিচয়

১৯৩৩  খ্রিস্টাব্দের ৩ নভেম্বর শান্তিনিকেতনের গুরু পল্লীতে খড়ের চালা ঘরের বিশ্বজয়ী অমর্ত্য সেনের জন্ম। প্রীতম ছিলেন ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য ও রসায়নের অধ্যাপক। মাতা ছিলেন অমিতা সেন। দাদু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন ক্ষিতিমোহন সেন।

 অমর্ত্য সেনের বাল্যকাল ও শিক্ষা

অমর্ত্য সেনের ডাকনাম ছিল বাবলু। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর নাম রাখেন অমর্ত্য। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। লেখাপড়া সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্য, নাটক, ছবি আঁকা, ম্যাজিক শেখায় কেটেছে তার ছোটবেলা। অমর্ত্য শিক্ষা শুরু মান্দালয়। এরপর দাদু ক্ষিতিমোহন সেন এর কাছে থেকে লেখাপড়া করেন অমর্ত্য সেন।

তারপর শিক্ষালাভের জন্য তিনি চলে যান ঢাকাতে। মেট্রিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তারপর প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে প্রথম বিএ পাস করেন এবং ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজ থেকে ডক্টরেট করেন।

অমর্ত্য সেনের কর্মজীবন

১৯৫৬-৫৮  খ্রিস্টাব্দ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নিযুক্ত হন।১৯৬৩-৭১  দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ১৯৭৭-৮০  খ্রিস্টাব্দে অক্সফোর্ডের অধ্যাপক ছিলেন।১৯৮০  খ্রিস্টাব্দে তিনি ডিলিট সম্মান পান।১৯৯৮  খ্রিস্টাব্দ থেকে তিনি তিনি কলেজের আচার্য হিসেবে কার্যকর গ্রহণ করেন।

 অমর্ত্য সেনের গবেষণা, সাফল্য ও স্বীকৃতি

অমর্ত্য সেন জনকল্যাণমূলক অর্থনীতির গবেষক। অর্থনীতির ওপর তিনি অসংখ্য বই লিখেছেন। এইসব গ্রন্থের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি নোবেল প্রাইজ পান। অধ্যাপক অমর্ত্য সেনের অর্থনীতিতে অবদান অগ্রগতি দর্শনচিন্তা পদ্ধতির ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে।

তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ “চয়েস অফ টেকনিস “ ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়। ১৯৭০  প্রকাশিত হয় “গ্রোথ ইকোনমিক্স”। দুর্ভিক্ষের কারণ নিয়ে লেখা গ্রন্থের জন্য নোবেল পুরস্কার। ভারত সরকার দেশের সর্বোচ্চ সম্মান ভারতরত্ন দিয়ে দেশের এই কৃতী সন্তানকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।

 দুর্ভিক্ষ অমর্ত্য সেনের কাজ অর্থনীতিতে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছে। তার কন্যার অর্থনীতি স্বীকৃতি পাওয়ার সময় এশিয়াবাসী যেমন গর্বিত তেমনি তার সুফল হয়তো নতুন শতকের মানুষ জয় করবে দারিদ্র্য এবং ক্ষুধা।