মানবজীবনে পরিবেশের গুরুত্ব

মানুষ ও প্রকৃতি একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মানুষ জন্মের পর থেকে তার পরিবেশ এর মধ্যেই বেড়ে ওঠে। পরিবেশ কে ঘিরে গড়ে ওঠে শিশুর জীবন। সুষ্ঠু ও সুন্দর পরিবেশ শিশুকে সুস্থতা প্রদান করে। আবার বাজে পরিবেশের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। উপযুক্ত পরিবেশ জীবন কে গতিশীল ও কর্মময় করে তোলে।

 পরিবেশ পরিচয়

প্রকৃতি মানুষের চরিত্র গঠন করে। মানুষকে উদার করে। যথার্থ বিচরণভূমি মানুষের ক্ষেত্রে তার পরিবেশ। পরিবেশ বলতে সাধারণভাবে বোঝায় তার আশেপাশের জল, বায়ু, জীবজগৎকে। মানব শিশুর পরিবেশ তার গৃহ। আর একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পরিবার তার সমাজ। ফরাসি দার্শনিক রুশো বলেছেন, “শিশু পবিত্র হয়ে জন্মায়। কিন্তু সমাজতাকে কলুষিত করে।”  তাই সব সময় সুন্দর সুস্থ পরিবেশ মানুষের আকাঙ্ক্ষিত।

 প্রকৃতি পরিবেশ

প্রকৃতির মধ্যে থেকেই মানুষ বেড়ে ওঠে। এই দুয়ের সম্পর্ক যুগ যুগান্তরে। প্রকৃতির খোলা আকাশের থেকে মানুষ শিক্ষা পায় উদারতার। মানুষের পাশে থাকে শ্যামল, সবুজ অরণ্য। প্রকৃতির মধ্যে থেকে মানুষ পায় উপলব্ধি। প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ লীলা চলছে আদিমকাল থেকে। তাই প্রকৃতি পরিবেশ থেকে দূরত্ব মানুষকে যান্ত্রিক করে তোলে।

 পারিবারিক পরিবেশ

পরিবার হল প্রত্যেকটি মানুষের প্রথম পরিচয়, প্রথম আশ্রয়। আমাদের জীবনে পরিবারের গভীর প্রভাব লক্ষ্য করা যায়। পরিবারের সহায়তায় যেকোনো ব্যক্তিদের আদর্শ নাগরিক হতে পেরেছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে শুরু করে নেহেরু পরিবার এরই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। পরিবারের সর্বাধিক সুস্থ জীবনদান করতে পারে।

 বিদ্যালয় পরিবেশ

মানুষের গৃহপরিবেশ এরপর বিদ্যালয় পরিবেশ সাহায্য করে আদর্শ ভাবে গড়ে তুলতে। বিদ্যালয় পরিবেশ থেকে শুরু হয়েছে শিশুর সমাজে পরিবেশের পরিচয়। বিদ্যালয়ের পরিবেশ প্রভাব প্রতিটি মুহূর্তে শিশুর মধ্যে ক্রিয়া করে। মানুষের চরিত্র গঠনের ক্ষেত্রে বিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। স্কুল-কলেজ হলে জীবনে প্রস্তুতি পর্বের ভীত। আদর্শ শিক্ষা ব্যবস্থায় আদর্শ জীবনের পথ গড়ে তুলতে সাহায্য করে। বিদ্যালয় পরিবেশ যথার্থভাবে মানুষ গড়ে তোলে।

 সামাজিক পরিবেশ

সুস্থ সামাজিক পরিবেশ হলো প্রতিটি সুস্থ মানুষের কাছে কাম্য। সামাজিক পরিবেশ যত উন্নত হবে সেখানকার জনগণ ততটাই উন্নত ধরনের হবে। যে সমস্ত সমাজে অর্থনৈতিক দিক থেকে অনগ্রসর ও অনুন্নত মানব জীবনে উন্নতি তাদের দ্বারা কিছুটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। আর এখনকার অনুন্নত মানুষদেরকে কাজে লাগাতে চায় সমাজবিরোধীরা। কুৎসিত মনোভাবের যুবকদেরকে তারা চায় উগ্রতা প্রদান করতে এবং সমাজকে পঙ্গু করে তুলতে। আর তাই সর্বদা সুস্থ সমাজ গড়ে তুলতে হবে।

 মানুষের জীবনে পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। পরিবেশের মধ্যে লুকিয়ে আছে অপার, অসীম শুভশক্তি, যার ওপর ভর করে মানুষ তার জীবনকে উন্নত করে তুলতে পারে। আবার অপর পক্ষে স্বার্থন্বেষী মনোভাবের কিছু ব্যক্তির জন্য পরিবেশ নিমেষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়। তাই সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশ উপায় সবদিক থেকে আদর্শ করে গড়ে তুলতে হবে যাতে ভবিষ্যতে শিশুরা সেখানে শান্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে।