কল্পনা চাওলা মহাকাশচারী জীবনী বাংলা রচনা

কিছু মানুষ আছেন যারা তাদের নাম স্মরণীয় করে রাখার জন্যই এই পৃথিবীতে আসেন। বীরাঙ্গণা কল্পনা চাওলা তাদেরই মত একজন। অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে থেকেও দু-দুবার মহাকাশে পাড়ি দিয়ে শুধুমাত্র একজন ভারতীয় মহিলা হিসাবে নয় পৃথিবীর সমগ্র নারী জাতির কাছে আদর্শ ও প্রেরণার উজ্জ্বল প্রতীক হয়ে থাকবেন তিনি।

কল্পনা চাওলা মহাকাশচারী জীবনী বাংলা রচনা

কল্পনা চাওলা জন্ম ও বংশ পরিচয়: ১৯৬১  খ্রিস্টাব্দে ১ জুলাই দিল্লি থেকে ১৬১ মাইল জুড়ে কার নামে একটা ছোট শহরে কল্পনা চাওলা জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা ছিলেন বেনারসি লাল চাওলা ও মাতা ছিলেন সংযুক্তা দেবী।

কল্পনা চাওলা বাল্যকাল ও শিক্ষা

ঠাকুর বালনিকেতন  স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৭৫  খ্রিস্টাব্দে কলেজের পাঠ চুকিয়ে  যোগদান চন্ডিগড় পাঞ্জাব ইঞ্জিনীরিং কলেজ এর অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে এবং তারপর ১৯৮২ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকার টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর এবং কলরাডো বিশ্ববিদ্যালয় এয়ারস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং পি.এচ.ডি ডিগ্রী নিয়ে ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন গবেষণা কেন্দ্র নাসায় যোগ দেন।

কল্পনা চাওলা কর্মজীবন

১৯৯৫  খ্রিস্টাব্দের মার্চে জংশন স্পেস সেন্টারে ডাকা হল কল্পনাকে নাসার 15 তম মহাকাশচারী হিসাবে। ১৯ নভেম্বর ১৯৯৭ খ্রিস্টাব্দে কলম্বিয়া মহাকাশযানে চেপে প্রথম মহাকাশে পাড়ি দিলেন তিনি। ৬৫ লক্ষ মাইল ঘুরে পৃথিবীতে ২৫২ প্রদক্ষিণ করে ৩৭৬ ঘন্টা ৪০ মিনিট কাটিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন তিনি।

এরপর দ্বিতীয় বর্ষের মহাকাশযাত্রার ২০০৩ এর নতুন শতাব্দীতে। অনেক স্বপ্ন সফল করার উদ্দেশ্য নিয়ে নাসা থেকে উৎক্ষেপিত হলো কলম্বিয়া। দিনটি ছিল ১৬ জানুয়ারি ২০০৩ এর কিন্তু হায় নিয়তির নিষ্ঠুর পরিহাস এসে স্বপ্ন সার্থক হলো না কল্পনা সহজ মহাকাশচারীর পৃথিবীর বুকে পা রাখার মাত্র ১৯ মিনিট আগে পৃথিবী থেকে প্রায় ২ লক্ষ ৭০ ফুট দূরে যান্ত্রিক গোলযোগের জন্য মহাকাশে ধ্বংস হয়ে গেল কলম্বিয়া।

মহাকাশচারীরা ধ্বংসাবশেষ টুকরো টুকরো হয়ে ভেঙে পড়ল আমেরিকার টেক্সাস অঞ্চলে। কল্পনা সমস্ত স্বপ্নকে নিয়ে চিরদিনের মত হারিয়ে গেলে।

 ভারতের এক অনামি শহর থেকে অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে কল্পনা নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সফলতার উচ্চ শিখরে। যতদিন এই পৃথিবী থাকবে এবং মানুষ মহাকাশে পাড়ি দেবে ততদিন ভারত তথা বিশ্বের সমগ্র মানবজাতি কল্পনা চাওলা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।