আজ আমরা একথা অবশ্যই স্বীকার করতে পারি যে, বিশ্বের কর্ত্যব্য মুক্তির ইতিহাসে ইন্টারনেট একটা নিরব বিপ্লব ঘটিয়ে দিয়েছে।যতই সভ্যতা আরো বেশি এগিয়ে চলবে ততই আমরা ইন্টারনেটের প্রতি আরও নির্ভরশীল হয়ে উঠব।ইন্টারনেট ব্যাপারটা কি, সেই সম্পর্কে কোনো কথা বলার আগে আমাদের কম্পিউটার সম্পর্কে প্রাথমিক ধারনা করতে হবে।
কম্পিউটারের আজব জগৎ
যোগাযোগ ব্যবস্থার সূচনা হয়েছিল ১৮৭৬ খ্রিষ্ঠাব্দে। ১৮৭৬ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ গ্রাহাম লেং টেলিফোনের ঘন্টা বাজিয়ে যে গুরুত্ব পদক্ষেপটি করেছিলেন বিজ্ঞান আর প্রযুক্তির অভাবনীয় উন্নতি তাকে আমূল বদলে দিয়েছে, চলে এসেছে কম্পিউটার।শুরু হয়েছে বিশ্বের তথ্য প্রযুক্তির ইতিহাসে নতুন নতুন আবিষ্কারের সূচনা।
ইন্টারনেট ব্যাপারটা কি?
ইন্টারনেট ব্যবহার নতুন হলেও এর বয়স নেহাত কম নয়। কোনরকম প্রাথমিক প্রস্তুতি ব্যতীত ইন্টারনেটে সূচনা হয়েছিল।১৯৬৯ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর দুই বৃহৎ শক্তিধর দেশ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে যখন ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়ে গেছে। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বিপদে পড়ে গিয়েছিলেন তারা ভাবলেন যদি সত্যি সত্যি পরমাণু বোমা পড়ে তাহলে তথ্য আদান-প্রদানের সমস্তপথ একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
এই কথা ভাবতে ভাবতে আমেরিকার প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা নতুন একটা প্রশ্ন করলে। তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন যে একটি তথ্য ভেঙে যদি একাধিক চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেওয়া হয় তাহলে এ সমস্যার সমাধান হতে পারে। এভাবে ইন্টারনেটের জন্ম হয়। এরকমভাবে বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে গেলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণার ধীরে ধীরে এই নেটওয়ার্ক পদ্ধতির মধ্যে ঢুকে পড়ল।
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
কম্পিউটারকে আমরা ইন্টারনেটের ক্ষেত্রে ব্যবহার করে থাকি। এর মাধ্যমে বিভিন্ন নেটওয়ার্কে তথ্য ও সংবাদ প্রেরণ করা যায়। নেটওয়ার্ক এর বিভিন্ন ভাগ আছে। কোনটিকে বলা হয় ওয়াই এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ওয়ান এরিয়া নেটওয়ার্ক বিস্তার কোন ভৌগলিক গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় আবার সীমিত পরিসরে যেসব নেটওয়ার্ক কাজ করে তাদের বলে নেটাল এরিয়া নেটওয়ার্ক বা ল্যাম।
নির্দিষ্ট দৈর্ঘ্য সীমানা পেরিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম-নীতি মেনে কম্পিউটারের মধ্যে তামার তার বা অপটিক্যাল ফাইবার স্থাপিত হয়। তাছাড়া মাইক্রোওয়েভ এর সাহায্য নিয়ে হয়। নেটওয়ার্ক এর প্রত্যেকটি কম্পিউটার একটি নিজস্ব সাংকেতিক পরিচিত আছে। এটিকে নেটওয়ার্ক সফটওয়্যার অবিচ্ছেদ্য অংশ বলা হয়।
ইন্টারনেটে বিভিন্ন পদ্ধতি
আমরা ইলেকট্রনিক মেইল ইন্টারনেটের সাহায্য করতে পারি। কন্ত্রাভিসনে অংশ নিতে পারি এমনকি নেট এর সাহায্যে বিশ্বের তথ্য সারণী ইতিহাসের একটা বিপ্লব আনতে পারি। প্রথমে বলা উচিত ইলেকট্রনিক মেইল বা ই-মেইল কয়েক দশকের ডাক যোগাযোগ ব্যবস্থা তে একটা অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে।
ইমেইল সাধারণ ডাক ব্যবস্থা তে যেমন চিঠিপত্র কর্মীদের মধ্যে অবস্থিত। ঠিক একইভাবে ইমেইল এর ক্ষেত্রে আমরা তথ্য আদান-প্রদান করতে পারি। নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে যে নেটওয়ার্কে আশ্রয় করেই জন্ম হয়েছিল ইমেইল এর।
প্রথমে একটি ঘর থেকে আরেকটি ঘরে কম্পিউটারের মাধ্যমে চিঠিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হতো। ষাটের দশকে কম্পিউটারে আধুনিক প্রযুক্তির অনুপ্রবেশের ফলে ইন্টারনেটে বৃহত্তম জগতে প্রবেশ করে।
উপসংহার: অসুবিধা নেই যে আগামী দিনে আমাদের আরো অনেক দিক থেকে অনেক সাহায্য করবে। তখন আমরা প্রাকৃতিক বিপর্যয় যুদ্ধ করা থেকে আরম্ভ করে দৈনন্দিন জীবনকে অনেক বেশি আরামদায়ক করে তোলার ক্ষেত্রে অবশ্য ইন্টারনেটে দ্বারস্থ হব।